বিংশ শতাব্দীতে ইন্টারনেট সমগ্র বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এবং একবিংশ শতাব্দীতে ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে যার সুফল আমরা সবাই ভোগ করতে পারছি। ইন্টারনেটের সুবাদে নতুন একধরণের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে যেটিকে বলা হয় অনলাইন জব। মূলত ইন্টারনেট প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে যে অর্থ উপার্জন করা হয় তাকে অনলাইন ইনকাম বলা হয়।
আমি কি চাইলে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবো ?
হ্যাঁ, আপনি চাইলে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনার তিনটি জিনিসের প্রয়োজন হবে :
• ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার: অনলাইনে কাজ করার জন্য আপনার অবশ্যই একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারের প্রয়োজন হবে। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, মোবাইল দিয়ে কি অনলাইন থেকে ইনকাম করা সম্ভব নয়? হ্যাঁ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই সম্ভব তবে আপনি যদি সিরিয়াস ভাবে অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারের প্রয়োজন হবে।
• ইন্টারনেটের সংযোগ: অনলাইন কথাটি দ্বারা বোঝানো হয় যে আপনি ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত আছেন। সুতরাং ইন্টারনেটে কোনো ধরণের কাজ করতে হলে অবশ্যই আপনার ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হবে। আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনার ইন্টারনেট সংযোগটি যেন গতিসম্পন্ন হয় নাহলে এটি আপনার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
• দক্ষতা: অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে দক্ষতা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যে কাজকে পেশা হিসাবে বেছে নিয়ে উজ্জ্বল একটি ক্যারিয়ার গড়তে চান সেই কাজে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত দক্ষতা অর্জন করার চেষ্টা করে যেতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, একটি কাজে অদক্ষ হয়েও অনেকেই প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে চায় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়। সুতরাং একটি কথা মনে রাখতে হবে যে 'পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি', আপনাকে আগে পরিশ্রম করে একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে তারপর সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ভবিষতে ভালো কিছু করতে পারবেন।
অনলাইনে কাজ করার বিভিন্ন সুবিধার কারণে এই বিষয়ে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই অনলাইন থেকে ইনকাম করার কিছু উপায় এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো।
১) ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়
ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যেখানে আপনি কোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি ভিত্তিক কাজ করতে পারবেন যেমন, ক্লাইন্ট আপনাকে একটি কাজ দিল এবং আপনি চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পূর্ণ করে ক্লাইন্টকে জমা দিলেন। এভাবেই মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো হয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধা আপনি পাবেন যেমন, আপনি কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে আপনার বস আপনাকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে থাকে আবার আপনাকে কোন সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে হবে সেই নির্দেশনাও আপনার বস এর থেকেই আসে। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনি নিজেই বস এবং ক্লাইন্টের কাজটি সম্পূর্ণ করতে কত সময় লাগবে সেটি আপনি নিজেই নির্ধারণ করে দেন। আবার, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে শুরু করে একটি নির্দিষ্ট সময় পযন্ত কাজ করতে হয় কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করলে সকাল বা রাত যখনই আপনার মন চাইবে ঠিক তখনই আপনি কাজ শুরু করতে পারেন। এই ধরণের বিশেষ কিছু সুবিধা আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে পাবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করার সাইট বা মার্কেটপ্লেস কোনগুলো?
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে আপনি একটি একাউন্ট খুলে আপনার ভবিষৎ গড়ার যাত্রা শুরু করতে পারেন। নিচে'কয়েকটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেসের নাম দেওয়া হল :-
• Upwork
• Fiverr
এই মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপনি একাউন্ট তৈরী করুন এবং আপনার সম্পর্কে জানতে চাওয়া তথ্যগুলো দিন। আপনি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ সেই বিষয়গুলো অবশ্যই আপনার প্রোফাইলে উল্লেখ করুন। অবশেষে প্রোফাইল সেটআপ সম্পূর্ণ হলে আপনি মার্কেটপ্লেসগুলোর নিয়ম - কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন তাহলে সেখানে আপনি কিভাবে কাজ শুরু করবেন সেই সম্পর্কে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায়?
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধমে আপনি বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে পারেন যেমন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। এই বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ উপার্জন করা যায় যেমন, ওয়েব ডেভেলপমেন্টের জন্য আপনি হাজার ডলারের চেয়েও বেশি ইনকাম করতে পারবেন অথচ একটি আর্টিকেল রাইটিং এর জন্য আপনি মোটামোটি ৪০ - ৫০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন সুতরাং এটি সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ সেটির উপর। প্রথমত আপনি অর্থের পরিমানের কথা বেশি চিন্তা না করে নিজের কাজের দক্ষতাকে বৃদ্ধির চেষ্টা করুন তাহলে অবশ্যই আপনি একসময় সফল হবেন।
আরো পড়ুন : পৃথিবীর সেরা ৫ টি ফ্রিল্যান্সিং সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের পোস্টটি পড়তে পারেন।
পোস্ট : অনলাইন থেকে ইনকামের জন্য সেরা পাঁচটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট
২) ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়
ব্লগিং বলতে বোঝানো হয় যেখানে আপনি লেখালিখির মাধ্যমে নিজের মনের ভাব অথবা নিজের আইডিয়াগুলো শেয়ার করে থাকেন। সতুরাং লেখালিখি যদি আপনার পেশা হয়ে থাকে অথবা এই বিষয়ে যদি আপনার আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে আপনি ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারেন। ব্লগিং করতে হলে আপনাকে অবশ্যই গুছিয়ে এবং সুন্দর করে লিখতে জানতে হবে।
ব্লগিং এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করার সাইট কোনগুলো?
ব্লগিং এর মাধ্যমে ইনকাম করতে হলে অবশ্যই আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে এবং সেখানে নিয়মিত আপনাকে পোস্ট করতে হবে। তবে আপনাকে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে যে, ব্লগ এর পোস্টগুলো অবশ্যই আপনার নিজের দক্ষতাতে করতে হবে। আপনি যদি অন্যের পোস্ট কপি করে এনে নিজের ব্লগে পোস্ট করেন তাহলে তাহলে আপনার লেখা পোস্টটি কখনোই সার্চ ইঞ্জিন ইনডেক্স করবে না এবং আপনার ব্লগে বড় কোনো বিজ্ঞাপন কোম্পানি বিজ্ঞাপন দিতে চাইবে না সুতারং আপনার ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করাও মুশকিল এর বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরী করার জন্য বিভিন্ন প্লাটফর্ম রয়েছে তার মধ্যে কিছু জনপ্রিয় প্লাটফর্ম এর নাম নিচে দেওয়া হলো :-
• Blogger
• Wix
ব্লগিং এর মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায়?
ব্লগিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন উপাইয়ে অর্থ উপার্জন করা যায় যেমন - বিজ্ঞাপন, প্রোডাক্ট সেল, প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর রিভিউ ইত্যাদি। তবে ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে ইনকামের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে বিজ্ঞাপন। আপনার ব্লগ সাইটটি যদি আপনার পছন্দের বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের পলিসি এবং রিকুইরেমেন্ট মেনে চলে তাহলে আপনি বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য আবেদন করতে পারেন। বিজ্ঞাপন থেকে আপনি কেমন অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সেটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন কত ভিসিটর আসে, ভিসিটররা মূলত কোন দেশে বসবাস করে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর। আপনাকে মূলত ব্লগের কনটেন্ট এর উপর গুরুত্ব দিতে হবে। কনটেন্ট যত কোয়ালিটি সম্পন্ন হবে ওয়েবসাইটে বেশি ভিসিটর আসার সম্ভবনা তত বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার ইনকামও বৃদ্ধি পাবে।
আরো পড়ুন : অনলাইন থেকে ইনকামের জন্য সেরা বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের পোস্টটি পড়তে পারেন।
পোস্ট : অনলাইন থেকে ইনকামের জন্য সেরা পাঁচটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক
৩) ড্রপশিপিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়
বর্তমান সময়ে অর্থ উপার্জন করার জন্য ড্রপশিপিং অত্যান্ত একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। ড্রপশিপিং এর অর্থ সহজ ভাষায় বলতে গেলে একটি পণ্যকে কম দামে ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রয় করা। উদহারণস্বরূপ বলা যায় যে, চীন থেকে একটি পণ্য ১০ ডলারে ক্রয় করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেটিকে ৩০ ডলারে বিক্রয় করলে ২০ ডলার হাতে থেকে যায় এবং এই ২০ ডলার থেকে পণ্য ডেলিভারি, বিজ্ঞাপন সহ বিভিন্ন খরচ মোট ১০ ডলার বাদ দিলে বাকি যেই ১০ ডলার থেকে যায় সেটাই আসল ইনকাম।
নিম্ন অথবা মধ্যম আয়ের দেশ গুলোতে একটি পণ্য উৎপাদন করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় সেই একই পণ্য উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে উৎপাদন করতে বহুগুন বেশি অর্থ খরচ হয়। ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে মূলত নিম্ন অথবা মাধ্যম আয়ের দেশগুলো থেকে কম দামে পণ্য ক্রয় করে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে পণ্যটিকে বেশি দামে বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করা হয়।
ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করার সাইট কোনগুলো?
ড্রপশিপিং করার জন্য একটি প্রফেশনাল নামের ডোমেইন, পণ্য বিক্রয়ের জন্য অনলাইন স্টোর বা ওয়েবসাইট, জনপ্রিয় একটি পেমেন্ট মেথড এবং পণ্যগুলি প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন ছাড়াও বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়।
ড্রপশিপিং এর জন্য পণ্য ক্রয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হলো :-
• Alibaba
ড্রপশিপিং এর স্টোর সেটআপের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো :-
• Shopify
ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায়?
ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে আপনি কি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সেটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনার বিজ্ঞাপনের বাজেট এবং প্রোডাক্ট মার্কেটিং স্কিলের উপর। আপনার প্রতিদিনের বিজ্ঞাপন বাজেট যদি বড় অঙ্কের হয় তাহলে আপনি প্রচুর প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। আপনার মার্কেটিং টিম যদি অভিজ্ঞ হয় তাহলে আপনি কম খরচে বেশি সেল আনতে পারবেন। সুতরং ড্রপশিপিং এর ইনকাম মূলত এই দুইটি জিনিসের উপরেই বেশি নির্ভর করে।
আরো পড়ুন : ড্রপশিপিংয়ের মাধ্যমে আয় করা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের পোস্টটি পড়তে পারেন।
পোস্ট : ড্রপশিপিং করে কিভাবে অনলাইন থেকে আয় করা যায়?
৪) এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়
একটি বিশেষ বা এফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে কোনো প্রোডাক্ট সেল করে কিছু কমিশন লাভের প্রক্রিয়াকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। উদহারণস্বরূপ বলা যায় যে, একটি প্রোডাক্ট এর দাম ৫০ ডলার আর আপনি যদি এফিলিয়েট হিসাবে কাজ করে প্রোডাক্টটি সেল করতে পারেন তাহলে আপনি ২০% কমিশন পাবেন অর্থাৎ ৫০ ডলারের একটি প্রোডাক্ট সেল করতে পারলে আপনি ১০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। মূলত এইভাবেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয়ে থাকে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করার সাইট কোনগুলো?
এফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত একটি ঝামেলা মুক্ত আয়ের মাধ্যম কারণ, আপনাকে প্রোডাক্ট তৈরী করা থেকে শুরু করে প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেওয়া কোনো কিছুই করতে হচ্ছে না। আপনি শুধু একটি বিশেষ লিংক বা এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে প্রোডাক্টটি সেল করবেন এবং আপনার জন্য নির্ধারিত কমিশন আপনি অর্জন করবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর থেকে ইনকাম করার জন্য কিছু জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস নিচে দেওয়া হলো।
• Amazon
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায়?
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি কি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সেটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনার সেল এর উপর। সুতরাং আপনাকে ভাবতে হবে প্রোডাক্টটি আপনি সেল কিভাবে করবেন। প্রোডাক্ট সেল করার জন্য আপনি একটি ব্লগে প্রোডাক্টের রিভিউ লিখতে পারেন, আপনার ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক পেজ অথবা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রোডাক্টটি প্রচার করতে পারেন অথবা পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রোডাক্টটি সেল করতে পারেন। একটি বিষয় মনে রাখবেন যত বেশি প্রোডাক্ট আপনি সেল করতে পারবেন আপনার ইনকাম ঠিক ততই বেশি হবে।
৫) ইউটিউবের মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়
ইউটিউবে আপনি একটি চ্যানেল খুলে তারপর সেখানে ভিডিও আপলোড করে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে ব্যাপারটি শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে সেটি বাস্তবায়ন করা ঠিক ততটাই কঠিন। একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার আগে আপনাকে সির্দ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে যে চ্যানেলটি কোন বিষয়ের উপর আপনি খুলতে চান তারপর সেই বিষয়ের সাথে মিল রেখে আপনাকে একটি সুন্দর নাম ঠিক করতে হবে এবং আপনার চ্যানেলে একটি ক্রিয়েটিভ লোগো আপনাকে সেটআপ করতে হবে। তারপর আপনাকে ভিডিও কোয়ালিটি, সাউন্ড কোয়ালিটি সহ বিভিন্ন জিনিস মাথায় রেখে কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও বানানোর চেষ্টা করতে হবে। আপনাকে একটি জিনিস অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এই প্রতিযোগিতার যুগে যদি আপনি কনটেন্ট এবং ভিডিও কোয়ালিটি ভালো না করতে পারেন তাহলে ইউটিউবের এলগোরিদম আপনার ভিডিওকে দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে না। সুতরাং এর জন্য আপনাকে প্রচুর সময় দিতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে।
ইউটিউব এর মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায়?
ইউটিউব এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে যেমন, বিজ্ঞাপন, পেইড রিভিউ, এফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো বিজ্ঞাপন। গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনি ইউটিউবে বিজ্ঞাপন চালু করতে পারেন তবে এর কিছু পূর্বশর্ত রয়েছে যেমন ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং ১ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার হয়ে গেলে তবেই চ্যানেলটি বিজ্ঞাপন প্রোগ্রামের জন্য আবেদন যোগ্য হয়। তারপর গুগল এর টিম চ্যানেলটিকে যাচাই - বাছাই করে দেখে যে চ্যানেলটি তাদের পলিসি মেনে চলছে কিনা। সবকিছু ঠিক থাকলে তবেই চ্যানেলটি বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য প্রস্তুত হয়। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনি কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সেটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে যেমন, আপনার ভিডিওটি কোন টপিকের, আপনার ভিডিওতে কি পরিমাণ ভিউ হচ্ছে, আপনার ভিডিও এর দর্শকরা কোন দেশ থেকে ভিডিওটি দেখছে, আপনার ভিডিওটিতে কতটি বিজ্ঞাপন দেখানো হয়েছে ইত্যাদি। তবে আপনার ভিডিও কোয়ালিটি ভালো হলে আপনার ভিডিও বেশি মানুষ দেখবে এবং আপনার ইনকাম ও বেশি পরিমাণ হবে।